সাবেক অর্থমন্ত্রীকে বর্তমান অর্থমন্ত্রী

আপনার স্বপ্নের বীজ লালন করব

‘আপনি আমাদের মাঝে ছিলেন, আছেন, থাকবেন। যে স্বপ্নের বীজ বপন করে গিয়েছেন, আমরা তা যতœ করে বড় করব। আপনি যে পর্যন্ত করে গিয়েছেন আমরা সেখান থেকে শুরু করব।’ সম্প্রতি রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে বিদায় জানাতে গিয়ে আবেগঘন এসব কথা বলেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী আমি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছি। ভবিষ্যতে আরেকজন আসবেন। তিনিও আমার শেষ থেকে শুরু করবেন।
তিনি বলেন, আমি কোথাও মুহিত ভাইয়ের শূন্যতা অনুভব করতে চাই না। আমাদের প্রয়োজনে আমরা তাঁকে ডাকব। তিনি ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের কাছে আসবেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমাদের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা রেখে যাবেন। এ কর্মপরিকল্পনা আমরা প্রয়োজনে ব্যবহার করব। অর্থমন্ত্রী উপস্থিতি এনবিআর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, মুহিত ভাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। আমরাও সবাই মুহিত ভাইকে ভালোবাসি। আমরা মুহিত ভাইকে শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি, আমাদের পরিবারের অভিভাবক হিসেবে মূল্যায়ন করি। তাই তাঁর উপদেশ, তাঁর নির্দেশ, তাঁর পরামর্শ আমাদের মেনে চলতে হবে। মুহিত ভাই আমাদের মাঝে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, মুহিত ভাই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দারিদ্র্য কমিয়েছেন, যা চাট্টিখানি কথা নয়। মাথাপিছু আয় ও রিজার্ভ বাড়িয়েছেন। ১০ বছর আগে পৃথিবীর অর্থনীতিতে আমাদের অবস্থান যা ছিল তার থেকে অনেক এগিয়েছি। আগামীতে অনেক দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাব। আমাদের সামনে যে স্বপ্নগুলো তার ভিত্তি রচনা করে গেছেন মুহিত ভাই। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এনবিআর আজকে আগের জায়গায় নেই। রাজস্ব আদায় কয়েক গুণ বাড়িয়েছে। এটা এমনি এমনি হয়নি। এটা মুহিত ভাইয়ের মেধা ও সবার সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামীতে আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব। বিশেষ করে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের প্রয়োজন। অর্থমন্ত্রী বলেন, মুহিত ভাই জাতির বিবেকের মাথা। তিনি সত্য কথা বলেন। তিনি যেখানে রেখে গেছেন সেখান থেকে আমরা শুরু করব। একইভাবে আমরা যেখানে রেখে যাব সেখান থেকে আগামী প্রজন্ম শুরু করবে। মুহিত ভাইয়ের কাছে আমাদের অনেক ঋণ। নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে উদ্দেশ করে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আপনি নেতৃত্ব নেন। আমি আপনার পেছনে আছি।
সাবেক এ অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম। পড়াশোনা শেষ করে সিভিল সার্ভিসে যোগ দিলাম। চাকরির সুবাধে জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য রেলওয়ে বাজেট করার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর। এর পরের সময়ে আমাকে পরিকল্পনা এবং অর্থ বিভাগের বাইরে আর কোনো কাজ করতে হয়নি। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমি চলে যাব এটা আমি আগে থেকেই জানতাম। তাই আগে থেকেই আমি কিছু পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছি। প্রতিবারই আমরা বাজেট আলোচনা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শুরু করি। কিন্তু আমি এবারে ডিসেম্বরে বাজেট আলোচনা শুরু করেছি। আগামী অর্থবছরের জন্য একটা বাজেট কাঠামো আমি এরই মধ্যে তৈরি করেছি। আপনি এটা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাবেন। প্রয়োজন মনে করলে এটা ধরে আপনি বাজেট করতে পারবেন। তিনি বলেন, আমি আরো আগেই অবসর নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরে চিন্তা করলাম শৈশবে এত এত স্বপ্ন দেখতাম। এসব স্বপ্ন পূরণে আরো বেশি সময় কাজ করা প্রয়োজন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে আমরা যা অর্জন করেছি এর পেছনে আছেন একজন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি আমাকে বুড়ো বয়সে দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আচরণ অনেক প্রগ্রেসিভ। এটাও বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য অনেক বড় একটা কারণ। এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাবেক এই অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে অঙ্গীকার করছি, যখনই প্রয়োজন হবে সহযোগিতার জন্য ডাকবেন, আসব।
তিনি নতুন অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রকে রিক্রুট করতে পারেন। তারা জরিপ করুক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা জরিপ করবে। কতগুলো বাড়ির মালিক। কী পরিমাণ সম্পদ আছে। মানুষের চরিত্রে পরিবর্তন আনার জন্য এ পদক্ষেপ নিতে পারেন। আপনি এটার নেতৃত্ব দেবেন। আমি আপনার পেছনে আছি। আপনি চাইলে করদাতার সংখ্যা বহুগুণ বাড়াতে পারবেন। সভাপতির বক্তৃতায় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অতীতে বাজেট প্রস্তুতকালীন সময়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা দুই তিন বাজেটে নেয়া প্রত্যেকটি বিষয় নিজে দেখতেন। ভবিষ্যতেও আমরা নতুন অর্থমন্ত্রীর কাছে একই রকম সময় চাইব। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। কোনো কাজ পছন্দ না হলে বলতেন রাবিশ। মুহিতের অতীত জীবনের একটি ঘটনা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজবন্দি হিসেবে একবার আটক থাকাকালীন আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে কারা কর্মকর্তা জানতে চান কারাগারে সেবার মান কেমন? তার উত্তরে মুহিত বলেছিলেন রাবিশ। এর মানে তিনি কখনো সত্য কথা বলতে ভয় পান না।

মুহিতের জীবন বৃত্তান্ত

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী দেশের কৃতী সন্তান এ এম এ মুহিত দেশের প্রয়োজনে তাঁর কর্মকৌশল, মেধা, সততা, দক্ষতা ও সেবা দেখিয়ে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের গৌরব বৃদ্ধি করছেন। সিলেটের এ সুসন্তান দেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করেছেন
বিস্তারিত...

যোগাযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
৩৩ তোপখানা রোড, মেহেরবা প্লাজা
১৩ তলা, ঢাকা -১০০০
ফোনঃ ৯৫৬০২২৫, ৯৫৫০০৫৫,
ই-মেইলঃ info@campus.org.bd

মেইল করুন